সুনামগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হল নিখোঁজ সাংবাদিক মুশফিকুর রহমানকে
প্রকাশ: ২০১৯-০৮-০৬ ১৩:৫৬:৪০ || আপডেট: ২০১৯-০৮-০৬ ১৩:৫৬:৪০

ডেস্ক রিপোর্ট: বেসরকারি মোহনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার মুশফিকুর রহমানকে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার ৬ আগস্ট ভোরে সদরের গোবিন্দপুর এলাকায় একটি মসজিদের সামনে থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে গত শনিবার ৩ আগস্ট সন্ধ্যার পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
পুলিশ জানায়, মুশফিকুর আজ ভোরে গোবিন্দপুর এলাকার একটি মসজিদের সামনে যান। সেখানে এক মুসল্লির কাছে তিনি কোথায় আছেন, তা জানতে চান। এর পর তার পরিচয় দেন। স্থানীয় বাসিন্দারা মোহনা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি কুলেন্দু শেখর দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে মুশফিকুরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।
এদিকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুশফিকুর বলেন, তিনি কীভাবে এখানে এসেছেন, তার কিছুই জানেন না। শনিবার গুলশান এলাকায় তার চোখে কিছু দেওয়া হয়। এর পর তিনি শুধু হেঁটেছেন বলে মনে হয়েছে। একপর্যায়ে তিনি আর কোনো কিছু বুঝতে পারেননি। যখন জ্ঞান ফেরে, তখন বুঝতে পারেন তার চোখ ও হাত বাঁধা। কয়েকজন লোক ছিল। তাকে কেন ধরে আনা হয়েছে, তা জানতে চান তিনি। ওই লোকজন তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
তিনি বলেন, তিন দিন তাকে শুধু একটি কেক ও কিছু পেয়ারা খেতে দেওয়া হয়েছে। ভাত খেতে চাইলে মারধর করা হয়। তাকে কয়েকবার মারধর করা হয়েছে। কেন তাকে ধরে নেওয়া হয়েছে, তা ওই লোকজন বলেনি। তারা একবার বলেছে, তাকে গুলি করে মারবে। আরেকবার বলেছে জবাই করবে।
মুশফিকুর সুনামগঞ্জে কীভাবে এলেন, তার কিছুই বলতে পারেননি। একটি গাড়ি থেকে তাকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। নামানোর পর তাকে দৌঁড় দিতে বলা হয়েছে। এর পর তিনি দৌঁড়াতে থাকেন। মুশফিক বলেন, ‘আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছেন। কেন, কারা এটা করেছে, আমি বুঝতে পারছি না।’
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক নাসির উদ্দিন জানান, মুশফিকুরের শরীরে মারধরের চিহ্ন আছে। শরীরে ব্যথা আছে। চোখে কোনো কিছু দেওয়া হয়েছিল। এ কারণে তিনি ঝাপসা দেখছেন। তবে বিশ্রাম নিলে ঠিক হয়ে যাবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিন্নাতুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঢাকায় মুশফিকুরের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ঢাকা থেকে লোকজন আসছেন। তারা এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’
উল্লেখ্য, গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার গুলশানে মামার সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে মুশফিকের খোঁজ মিলছিল না বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ওই রাতেই গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর-১৯৪) করেন মুশফিকুরের মামা এজাবুল হক।
এর আগে সম্প্রতি মুশফিক তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার চরগোয়ালী খন্দকার নাজির আহমেদ বহুমুখী বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। এর পর অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি তাকে গত ২১ জুলাই রাতে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে পরিবারসহ গুম এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ২২ জুলাই পল্লবী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নম্বর-১৯২০) করেন মুশফিকুর।
ট্যাগ :
© 2016 - All Rights Reversed dailyctgnews
Web Developed by Ctgtimes (Pvt.) Limited